অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়া গাইবান্ধা জেলা পরিষদ

অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়া গাইবান্ধা জেলা পরিষদ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি :
গাইবান্ধা জেলা পরিষদ গরীব, দুস্থদের সেবা ও জনকল্যাণে অবদান রাখার কথা থাকলেও স্থানীয় সরকারের বৃহৎ এই প্রতিষ্ঠানটি হয়ে উঠেছে অনিয়ম আর দুর্নীতির আখড়া। সাধারণ মানুষের উন্নয়নসহ বিভিন্ন প্রকল্পের নামে কর্মকর্তা-কর্মচারিরা লাখ লাখ টাকা বেয়ারার চেকের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে।
এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আত্মসাৎতের উদ্দেশ্যেই বেয়ারার চেকে টাকা দেয়া হয়। আর সচেতনমহলের মতে, জবাবদিহিতা না থাকায় প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না।

বেয়ারার চেকের মাধ্যমে টাকা না দেয়ার স্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও নিয়ম লঙ্ঘন করে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে চিকিৎসা, ধর্মীয় ও সামাজিক কল্যাণের নামে ৮ লাখ ৬ হাজার ৫শ’ টাকা, ২০১৪-১৫ এবং ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে গরীব মেধাবী ছাত্রদের বৃত্তি দেয়ার নামে ১২ লাখ ৫২ হাজার ৫শ’ টাকা এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ক্রীড়া-সংস্কৃতি খাতে জেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ বিভিন্ন নামে বেনামে ৭ লাখ ৮ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। কিন্তু কর্মচারিদের কেউ কেউ টাকার বিষয়ে কিছুই জানেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারি জানান, আমি এখানকার নৈশ প্রহরীর দায়িত্বে। আমার নামে যে টাকা উঠেছে সে সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।

আত্মসাতের উদ্দেশ্যেই অ্যাকাউন্ট পে চেক না দিয়ে বেয়ারার চেকে টাকা দেয়া হয় বলে মনে করেন জেলা পরিষদের এই সদস্য। আর সচেতন মহল বলছে, জবাবদিহিতা না থাকায় এই প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না।

গাইবান্ধা জেলা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জরিদুল হক বলেন, বেয়ারার চেক খুব স্বচ্ছ নয়। অনিয়ম, দুর্নীতি বেয়ারা চেকের মাধ্যমে হয়।

গাইবান্ধার সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি জহুরুল কাইয়্যুম বলেন, এই ধরণের প্রতারণা খুবই দু:খজনক। কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারি এ গুলো করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জানালেন, এসব অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

গাইবান্ধার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, এই বিষয় গুলোই দুদক ইতিমধ্যে হস্তক্ষেপ করেছে। তাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমার কাছে প্রতিবেদন আসলে আমি আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।

এছাড়া জালিয়াতির মাধ্যমে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে গাইবান্ধা জেলা পরিষদের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ খাত থেকে ১ লাখ ৮৮ হাজার, একই অর্থ বছরে চেয়ারম্যানের স্ববিবেচক তহবিল থেকে ১ লাখ ২০ হাজার এবং ল্যাপটপ ক্রয়ের
নামে আত্মসাৎ করা হয় ৯৭ হাজার ৫শ’ টাকা। আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত চেয়ে সম্প্রতি হিসাবরক্ষক শামীম মিয়া ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment